শিবপুরে রামনবমীর মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত তিন জনের আট দিনের পুলিশ হেফাজত।
হাওড়াঃ- শিবপুরে রামনবমীর মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত তিন জনের আট দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ হাওড়া আদালতের। আগ্নেয়াস্ত্রটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শিবপুরে রামনবমীর মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র-কান্ডে গ্রেফতার বেড়ে ৩। বুধবার সকালে এই নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী বলেন, গত ৩০ মার্চ শিবপুরের জি টি রোডে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ওই যুবককে সনাক্ত করা হয়। এই ঘটনার পর তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডি’কে। গোপন সূত্রে ওই যুবকের খবর পেয়ে সিআইডি’র সাহায্যে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিডি টিম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। প্রথমে জানা গিয়েছিল ঘটনার ২ দিন পর হাওড়া থেকে উত্তরপ্রদেশে পালিয়ে যায়। ধৃতের মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে মুঙ্গের থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার মুঙ্গেরের আদলত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে এখানে আনা হয়। ধৃতের নাম সুমিত কুমার সাউ (১৯)। মঙ্গেরের কাশিমবাজার থানা এলাকার বাঙ্গালমা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল ধৃত সুমিত। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে নন্দীবাগানের বাসিন্দা আরিয়ান গুপ্তা (১৮) নামের তার এক বন্ধুর কাছে ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি রাখা আছে। সেই খবর জানতে পেরে সেখানেও পুলিশ অভিযান চালায়। সেই আগ্নেয়াস্ত্রটি দিয়েছিল তারই এক বন্ধু ফকিরবাগানের বাসিন্দা অবিনাশ যাদব। রামনবমীর সময় অশান্তির কারণে পালানোর আগে অবিনাশকে বলেছিল আরিয়ান গুপ্তাকে সেটা দিয়ে দেওয়ার জন্য। এরপর নন্দীবাগানে অভিযান করে সেখান থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্রটি। ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। অভিযুক্ত আরিয়ান গুপ্তার কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার হয়েছে।
তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় অবিনাশের কি ভূমিকা ছিল তাও তদন্ত করে দেখা হয়। অস্ত্র দেওয়ার সময় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বয়ান রেকর্ড করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় পরে অবিনাশ যাদবকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত ৩ জনকেই এদিন হাওড়া আদালতে তোলা হয়। আটদিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেয় আদালত। এদিন হাওড়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তারাগতি ঘটক বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনের ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৫৩এ, ৩৪১, ১৮৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩, ৩০৭, ৪২৭, ৪৩৫, ৪৩৬, ৫০৬, ৫০৯, ১২০বি, ৩ & ৪ পিডিপিপি অ্যাক্ট, ওয়েস্টবেঙ্গল মেনটেনেন্স অফ পাবলিক অর্ডার আইনের ৯ ধারায় এবং অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। এদিন ধৃত তিনজনের আট দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেয় আদালত।