কিন্তু মেলেনি খেলার সুযোগ। আটটি ম্যাচে তাঁর দায়িত্ব ছিল, সতীর্থদের জন্য মাঠে জল বয়ে নিয়ে যাওয়া।
কখনওই তাঁকে নিয়ে সেভাবে মাতামাতি হয়নি। বরাবরই থেকেছেন প্রচারের আড়ালে। এর আগেও দু’বার এসেছিলেন ভারতে। কিন্তু মেলেনি খেলার সুযোগ। আটটি ম্যাচে তাঁর দায়িত্ব ছিল, সতীর্থদের জন্য মাঠে জল বয়ে নিয়ে যাওয়া। দেরিতে হলেও সেই বঞ্চনার জবার অবশেষে দিলেন উসমান খাওয়াজা। মোতেরায় ভারতের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার ৪ উইকেটে তোলা ২৫৫ রানের সিংহভাগই আসে খাওয়াজার ব্যাট থেকে। ২৫১ বল খেলে ১০৪ রানে তিনি অপরাজিত। হাঁকিয়েছেন ১৫টি বাউন্ডারিও।
এবারের বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে শতরান করলেন খাওয়াজা। প্রচণ্ড গরমে সারাদিন ধরে ভারতীয় বোলারদের শাসন করে দারুণ তৃপ্ত অজি ওপেনারটি। হবে নাই বা কেন! সিরিজের প্রথম দিকে যেখানে দলগত রান দুশোর গণ্ডি টপকাতে নাভিশ্বাস উঠছিল, সেখানে খাওয়াজা কপিবুক ব্যাটিং করলেন। দিনের অন্তিম ওভারে সামির বলে ফ্লিক শটে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট কেরিয়ারে ১৪তম শতরান পূর্ণ করেন। তারপরই অনাবিল হাসিতে ভরে ওঠে তাঁর মুখ। ৩৬ বছর বয়সি বলেন, ‘শতরানে পৌঁছে এমন আবেগতাড়িত কখনও হইনি। এভাবে হাসিওনি আগে। ভারতে আগের দুটো সফরে (২০১৩ ও ২০১৭) আটটা টেস্টে জল বয়েছিলাম। অবশেষে এই সফরে খেলার সুযোগ পেলাম। কেরিয়ারের মাঝপথে বলা হয়েছিল, আমি নাকি স্পিন খেলতে পারি না। তাই ভারতে খেলানো হয়নি। সেজন্যই এদেশে এসে সেঞ্চুরি করতে পারায় এত আনন্দিত। এই শতরান আশাই করিনি!’
উপমহাদেশের মাটিতে হালফিল খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আর তা কাজেও লাগিয়েছেন। ১১১৯ রান করেছেন ৭৪.০৬ গড়ে। চারটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ছ’টি হাফ-সেঞ্চুরিও। অতীতে ভারতে যদি খেলার সুযোগ পেতেন, তাহলে এই রেকর্ড আরও উজ্জ্বল হতেই পারত। সেই অভিমান ঘিরে রয়েছে তাঁকে। খাওয়াজার কথায়, ‘কেরিয়ারের শুরুতে দলকে পাশে পাইনি। মনে হয়নি যে, কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের সমর্থন আমার সঙ্গে রয়েছে। আগে স্পিনের বিরুদ্ধে খারাপ ছিলাম কিনা তা জানি না। তবে এখন স্পিন অবশ্যই ভালো খেলি। হাতে শট বেড়েছে, ডিফেন্সও মজবুত। তবে শুরুর দিকে শেখারও সুযোগ দেওয়া হয়নি আমাকে।’