কুলগাছিয়ার দুর্ঘটনায় মৃতের তালিকায় দুই কৃতী অধ্যাপিকা গবেষক। শিক্ষামহলে শোক।
হাওড়াঃ- হাওড়ার কুলগাছিয়ার দুর্ঘটনায় মৃতের তালিকায় রয়েছেন দুই কৃতী অধ্যাপিকা গবেষক। শিক্ষামহলে শোক। সোমবার সন্ধ্যায় উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়া ফ্লাইওভারে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি প্রাইভেট গাড়ির সঙ্গে ট্রেলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। সোমবার গভীর রাতে মৃতদের পরিচয় জানা যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে দুজন ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা। অধ্যাপিকা নন্দিনী ঘোষ ছিলেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এবং মিশা রায় এনভারমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলেন। নন্দিনী ঘোষের বাড়ি হুগলির উত্তরপাড়া এলাকায়।
মিশা রায়ের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। তৃতীয় মৃত ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ দাস। তিনি গাড়ির চালক ছিলেন। তাঁর বাড়ি হুগলি উত্তরপাড়ার কানাইপুরে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নন্দিনী ঘোষ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলেন। তিনি প্রত্যেকদিন নিজের গাড়িতেই যাতায়াত করতেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর সময় সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়িতে ফোন করে জানান তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। কিন্তু আটটা বেজে গেলেও তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার সুদীপ ঘোষ মোবাইলে বারবার ফোন করেন। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও তিনি কোন সাড়া না পেয়ে লালবাজারে ১০০ নম্বরে ডায়াল করেন। এমনকি নবান্নতেও ফোন করেন। শেষমেষ রাতে উলুবেড়িয়া থানা থেকে দুর্ঘটনার খবর পান। সুদীপবাবু জানিয়েছেন নন্দিনী একাধিকবার ইউরোপ এবং আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাপত্র পড়তে গেলেও তিনি বিদেশে না থেকে এদেশে অধ্যাপনা করতে চেয়েছিলেন। মিশার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করলেও মাঝে মাঝে তার সহকর্মীর সঙ্গে গাড়িতে ফিরতেন। সোমবারও একই গাড়িতে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। দুই পরিবারই জানিয়েছে, দুজনেই পরিবারের একমাত্র মেয়ে ছিলেন। দুজনেই অবিবাহিতা ছিলেন। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানিয়েছেন দুই অধ্যাপিকার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। দুজনেই প্রতিভাবান গবেষক এবং অধ্যাপিকা ছিলেন। তাঁদের অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং অধ্যাপকরা সকলেই শোকস্তব্ধ।