বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকার সঙ্গে সহবাসের অভিযোগে অভিযুক্তের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড।
সৌমিত্র গাঙ্গুলি, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমানঃ- বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথমে এক নাবালিকার সঙ্গে সহবাস ও পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলো প্রতিবেশী যুবক। ২বছরের বেশি সময় ধরে আসানসোল জেলা আদালতে মামলা চলার পরে শুক্রবার অভিযুক্ত যুবক সুরেন্দ্র হাঁসদার সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক এডিজে (দ্বিতীয়) তথা পকসো স্পেশাল জজ শরণ্যা সেন প্রসাদ। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬ ও পকসো আইনের ৪ নং ধারায় বিচারক যুবকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস কারাদন্ড যুবককে ভোগ করতে হবে। এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি তাপস উকিল বিচারকের কাছে আর্জি করে বলেন, সহবাসের কারণে নাবালিকা একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নাবালিকাকে ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে ক্ষতি পূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। সেই আর্জি মতো এদিন বিচারক ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে নাবালিকাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী বলেন, এই মামলায় মোট ৯ জন সাক্ষী দিয়েছেন। তার মধ্যে ৪ জন চিকিৎসক।
জানা গেছে, সাজা প্রাপ্ত যুবক সুরেন্দ্র হাঁসদা আসানসোল দক্ষিণ থানার ডামরা এলাকার বাসিন্দা। ২০২১ সালে ৭ মে ডামরা এলাকার বাসিন্দা এক নাবালিকার পরিবারের তরফে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো। তাতে বলা হয় প্রতিবেশী যুবক সুরেন্দ্র হাঁসদা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত ৫ মাস ধরে নাবালিকার সঙ্গে সহবাস করেছে। তাতে নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তখন যুবককে প্রতিশ্রুতি মতো বিয়ে করতে বলা হলে সে অস্বীকার করেছে। এও জানা গেছে, যুবক বিবাহিত। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬ ও পকসো আইনের ৪ নং ধারায় একটি মামলা করার পাশাপাশি যুবককে গ্রেফতার করে। আসানসোল জেলা আদালতে মামলা শুরু হয়।
শুক্রবার আসানসোল জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী তথা পিপি তাপস উকিল বলেন, আদালতে সাক্ষী দেওয়া কালিন নাবালিকা একটি সন্তানের জন্ম দেন। আমি তার জন্য বিচারকের কাছে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করি। তার অনুমতি মেলার পরে সেই পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায় যে, ঐ সন্তানের বাবা হলো ঐ যুবক ও মা হলো ঐ নাবালিকা। এই মামলায় ৪ জন চিকিৎসক সহ মোট ৯ জন সাক্ষী দেন। সব সাক্ষ্য দান ও তথ্য প্রমান শেষে এদিন এডিজে (দ্বিতীয়) তথা পকসো স্পেশাল জজ শরণ্য সেন প্রসাদ সাজা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে বিচারক নির্যাতিতাকে ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।