রাজ্যে সংস্কৃত টোল বাঁচাতে এবার পথে নামলেন সংস্কৃত পণ্ডিত এবং ব্রাহ্মণরা।

হাওড়াঃ- রাজ্যে সংস্কৃত টোল বাঁচাতে এবার পথে নামলেন সংস্কৃত পণ্ডিত এবং ব্রাহ্মণরা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল রবিবার হাওড়ার আন্দুলে এক মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখান থেকেই রাজ্য সরকারের কাছে দাবীপত্র পেশ করা হয়। রাজ্যে সনাতন হিন্দু ধর্মকে বাঁচাতে এবার একজোট হচ্ছেন ব্রাহ্মণরা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সাঁকরাইল শাখার উদ্যোগে আন্দুলে অনুষ্ঠিত হয় ওই মহাসম্মেলন। এই মহাসম্মেলনে হাওড়া শহর এবং গ্রামীন এলাকা থেকে প্রায় এক হাজারেরও বেশি  সংস্কৃত পন্ডিত এবং ব্রাহ্মণ উপস্থিত হন। হাওড়ার সাঁকরাইল, পাঁচলা, ডোমজুড়, উলবেড়িয়া, আমতা, বালি এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পন্ডিত এবং ব্রাহ্মণরা ওই সম্মেলনে যোগ দেন। প্রসঙ্গত একটা সময় গোটা রাজ্য জুড়ে অসংখ্য সংস্কৃত টোল ছিল। সেখানে  পণ্ডিতরা সংস্কৃত ভাষা নিয়ে চর্চা করতেন। বেদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত সহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের চর্চা এবং অধ্যায়ন করা হত। এছাড়াও ব্রাহ্মণদের পূজো অর্চনা শেখানো হত। হাওড়ার আন্দুল, মাকড়দহ এবং বালিতে একাধিক সংস্কৃত পণ্ডিতদের টোল ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই সব সংস্কৃত পণ্ডিতের টোলগুলি ধ্বংস করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ফলে গোটা রাজ্যে প্রাচীন  ভারতীয় ভাষা সংস্কৃতের চর্চা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে। ধর্ম সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের রাজ্য সম্পাদক তপন কুমার মিশ্র বলেন আমরা চাই সংস্কৃত ভাষা তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক। এর জন্য পঞ্চম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সংস্কৃত ভাষাকে আবশ্যিক ভাষা হিসাবে স্কুলে পড়ানো হোক এটা আমরা চাই। এতে ভারতবর্ষের ধর্মগ্রন্থ বেদ ও পুরাণ সম্পর্কে মানুষ জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। তাতে সমাজের মঙ্গল হবে। এদিন তিনি আরও বলেন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র ব্রাহ্মণদের জন্য ১০০০ টাকার ভাতার বন্দোবস্ত করেছে। তবে গোটা রাজ্যে মাত্র আট হাজার জনের এই ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও সবাই বর্তমানে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন না।

আরো দশ হাজার ব্রাহ্মণদের ভাতার বন্দোবস্ত করার দাবি জানান তিনি। ওই সংস্থার কার্যকরী সভাপতি অচিন মুখোপাধ্যায় বলেন তারা চান সংস্কৃত টোলগুলি পুনরায় চালু হোক। এতে নতুন ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কিছু জানতে পারবেন। রবিবার এই সম্মেলনে বিশ্বশান্তি ও সকলের মঙ্গল কামনায় নগর কীর্তন ছাড়াও পুজোপাঠ ও মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। ব্রাহ্মণ ছাড়াও সনাতন হিন্দু ধর্মের অন্যান্য শ্রেণীর মানুষরাও এই ধর্মসভায় যোগ দেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সম্মেলনে সাঁকরাইল এলাকার একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তপনবাবু বলেন তাদের সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি কোনও যোগ নেই। তবে তারা রাজ্য সরকারের পাশে রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেচেদায় ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের অফিস তৈরির জন্য জমি দিয়েছেন। এখন তারা বিভিন্ন জেলায় এই ধরনের সম্মেলন করে তাদের নয় দফা দাবিকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *