বাংলায় ৬৪ হাজার বুথে তো আর তৃণমূল সন্ত্রাস করে জেতেনি ? বিরোধীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন সায়নীর।

হাওড়াঃ- উন্নয়নের নিরিখেই বাংলার মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। বাংলায় ৬৪ হাজার বুথে সন্ত্রাস করে তো আর তৃণমূল জেতেনি? হাওড়ায় মন্তব্য সায়নী ঘোষের। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে শনিবার ২১শের প্রচারে এক ট্যাবলোর সূচনা হয়। পাশাপাশি এক রক্তদান মেলা অনুষ্ঠিত হয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের হাওড়া জেলা সদরের সভাপতি কৈলাশ মিশ্রের উদ্যোগে। সেখানেই সায়নী ঘোষ ওই মন্তব্য করেন। বেলুড়ের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তুনু সেন, তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবের মেজাজে যাতে ভোট হয়। রাজ্যের প্রতিটি জায়গা লক্ষ্য রাখা সম্ভব নয়। এরজন্য নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন রয়েছে। বাংলায় ৬৪ হাজার বুথে সন্ত্রাস করে তো আর তৃণমূল জেতেনি? কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের। তাদের ব্যার্থতার দায় চাপানো হচ্ছে তৃণমূলের ঘাড়ে। বিরোধীদের বাঁচিয়ে রেখেছে টেলিভিশন। যতদিন টেলিভিশন আছে ততদিন বিরোধীরা আছেন। ওনাদের কাছে ভিসন নেই। টেলিভিশন আছে। মানুষের প্রাণ চলে যাক সেটা কারওই কাঙ্ক্ষিত নয়। কিন্তু এটা পরিষ্কার বিরোধীরা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। শুভেন্দু অধিকারী বলছেন প্রেসিডেন্সি রুল কিভাবে করতে হবে তা জানা আছে। মানুষ উন্নয়নের নিরিখে ভোট দেবেন। মন কি বাতের উপর নির্ভর করে ভোট দেবেন না। কাম কি বাতের ওপর নির্ভর করে ভোট দেবেন মানুষ। রাম, বাম, শ্যাম, ভাম সকলে মিলে তৃণমূলকে কর্নার করার চেষ্টা করছে। কারণ বিরোধীরা একা তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে পারছে না। আইন ব্যবস্থার উপর মানুষের শ্রদ্ধা থাকে। তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে সব রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এটা মানুষেরও প্রশ্ন। বিরোধীরা যা ইচ্ছে বললেও ভোটের নিরিখে তৃণমূল কংগ্রেস অনেক এগিয়ে আছে।

তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থা। কিন্তু সারা ভারতবর্ষ থেকে শুরু করে এই রাজ্যে বিচার ব্যবস্থার ধারক বাহকরা যেভাবে কথাবার্তা বলছেন তা দেখে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে, বিচার ব্যবস্থা সত্যি কি নিরপেক্ষ আছে ? এই রাজ্যে দেখা যাচ্ছে বিচারপতি একটি টিভি চ্যানেলে বক্তব্য রাখছেন। শাসক দলের মুখপাত্রের সম্পর্কে কুৎসা করছেন। শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে প্রকাশ্যে আক্রমণ করছেন। বিচারপতি ওপেন তাঁর নিজের চেয়ারে বসে বলছেন পঞ্চায়েত টাকা রোজগারের জায়গা। এই সব দেখে মনে হয়েছে কোথাও আর আইন ব্যবস্থা নিরপেক্ষ নেই। শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির অন্যান্য চুনোপুঁটি নেতাদের রক্ষাকবচ দিয়ে রাখা হয়েছে।জনতার রায় সকলের মেনে নেওয়া উচিৎ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যাঁরা তৃণমূল করতেন তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল হয়ে লড়েছেন তাঁদের জন্য দলের দরজা বন্ধ। কেউ যদি দলের সঙ্গে যুক্ত না থেকে নির্দলের টিকিটে জিতে থাকেন বা কেউ যদি অন্য দলের প্রতীকে জিতে থাকেন, তাঁরা যদি তৃণমূলে আসতে চান তাঁদের জন্য দরজা খোলা। নির্বাচনের বেশ কিছু মাস আগে সারা রাজ্য থেকে এরাজ্যের প্রশাসন, পুলিশ এবং এসটিএফ বোমা, গুলি, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস যদি রাজনৈতিকক স্বার্থে বোমা, গুলি, বেআইনি অস্ত্র কাজে লাগানোর মানসিকতা নিয়ে চলত তাহলে শাসক দল এত বোমা, গুলি উদ্ধার করতে পারত না।

আইএসএফ একটা সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক দল। যারা বিজেপির টাকায় মদতপুষ্ট। আমি বিজেপিকে বলব যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে ৩৫৫ এবং ৩৫৬ ধারা জারি করে দেখাক। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে মানুষ যখন এক হয় তখন তাঁদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক দল দাঁড়াতে পারে না। ৩৫৫ ও ৩৫৬ ধারা প্রয়োক করে গেলে এখানকার মানুষের জনরোষ কি তা হাড়েহাড়ে বুঝবে।

নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত তৃণমূলের কর্মীরা বেশী আহত, নিহত এবং আক্রান্ত হয়েছে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি এবং আইএসএফ যারা তাঁদের রাজনৈতিক জমি হারিয়েছে বাইরে থেকে বেআইনি অস্ত্র মজুত করে তৃণমুল কংগ্রেসের কর্মীদের খুন করছে। নির্বাচনী রায়ের মধ্য দিয়ে মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে মানুষ তাঁদের সমর্থন করছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *