দুর্গাপুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সভাস্থ্যলের অনুমতি না দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধুন্দুমার কান্ড দুর্গাপুরে।
সৌমিত্র গাঙ্গুলি, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমানঃ- রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা বলেই কি মিললো না মাঠের অনুমতি? দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত কল্পতরু ময়দানে বিজেপির জনসভার অনুমতি না মেলাকে কেন্দ্র করে ধুন্দুমার কান্ড দুর্গাপুরে ডিপিএল প্রশাসনিক ভবনের সামনে। ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিতে গেলে প্রশাসনিক ভবনের মূল গেটে বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই দলের জেলা সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় ও কর্মী সমর্থকদের নিরাপত্তারক্ষিরা আটকানোর চেষ্টা করলে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, রীতিমতো ডিপিএল প্রশাসনিক ভবনের গেটে ধাক্কা দিতে থাকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা, নিমেষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রশাসনিক ভবন চত্বর, ছুটে আসে কোকওভেন থানার পুলিশ, এরপর বিজেপির পাঁচ জনের প্রতিনিধি দল গিয়ে দেখা করেন কর্তৃপক্ষের সাথে; দেন দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি। মিটিং কল্পতরু মাঠেই হবে আর প্রশাসন আর রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ডিপিএল মিটিং বানচাল করার চেষ্টা করে তাহলে এর পরিনাম ভয়ঙ্কর হবে বলে হুশিয়ারী দেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই। মেয়াদ এক বছর কেটে গেলেও আজও হয়নি দুর্গাপুর পুরসভার নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস এমন কিছু অভিযোগকে সামনে রেখে আগামীকাল দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত গ্যামনব্রিজ কল্পতরু ময়দানে বিজেপির একটি জনসভা রয়েছে। দুপুর তিনটে এই সভা হবে, গত ২৭ তারিখ এই সভার অনুমতি চেয়ে ডিপিএল আর পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিত আর্জি জানায় জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। আচমকা গতকাল, রাজ্য সরকারের অধীনস্ত সংস্থা ডিপিএল বা দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড একটি মেল পাঠিয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ ও বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে দেয় এই ধরণের জনসভার জন্য কল্পতরু মাঠ ফিট নয়; তাহলে সভার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। এই মেলকে ঘিরেই এবার শুরু হয় বিতর্ক। কারণ ইতিমধ্যে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা আগামীকাল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই জনসভা সফল করার ডাক দিয়ে নানা কর্মসূচী নিয়ে ফেলে। টেন্ট করার গাড়িও কলকাতা থেকে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু, ডিপিএল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে তোলপাড় শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। আজ সকালে কল্পতরু ময়দানে সভাস্থ্ল পরিদর্শনে আসেন বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, জেলা বিজেপি সহ সভাপতি চন্দ্র শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য মন্ডল সভাপতিরা। এরপর তারা যান কোকওভেন থানায়, কথা বলেন থানার আধিকারিকদের সাথে। কিন্তু পুলিশ জানিয়ে দেয় মাঠ ডিপিএলের; তাই ওরা অনুমতি না দিলে সভার অনুমতি পুলিশ দিতে পারেনা। এরপরও উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা চলে আসেন ডিপিএল প্রশাসনিক ভবনের কাছে, মূল গেটের সামনে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। এরপর ডিপিএল কর্তৃপক্ষের সাথে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুইয়ের নেতৃত্তে কথা বলতে গেলে ডিপিএলের নিরাপত্তারক্ষিরা প্রশাসনিক ভবনের ভেতর ঢুকতে বাঁধা দেয়। উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়। নিমেষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ডিপিএল প্রশাসনিক ভবনের সামনে। একটা সময় নিরাপত্তারক্ষিদের বেস্টনি ভেঙে চলে যায় বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, যখন এই কল্পতরু মাঠে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা রাহুল গান্ধীর জনসভা হয়েছে, তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারীর সভা হয়েছে, সিপিআইএমের সভা হয়েছে তাহলে বিজেপির বেলায় কেন এমন পক্ষপাত মূলক আচরণ? এই গোটা ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূল রয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। যদিও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাবি তৃণমূল নেতৃত্বে। সবটাই নাট্ক; বিজেপিকে পাল্টা তোপ তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের। বিজেপি নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছেন যদি মাঠ ফিট নয় এই ধরণের সভার জন্য তাহলে ২৭ তারিখ লিখিত আবেদন জানানোর সময় কেন তাদেরকে জানানো হলো না???