স্কুলেই জমা জলে মশার আঁতুরঘর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে ক্লাস।

হাওড়াঃ- স্কুলেই জমা জলে মশার আঁতুরঘর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে ক্লাস। এমন দৈন্যদশার ছবি দেখা গেছে হাওড়ার বাঁকড়ার ইসলামিয়া স্কুলে। গত পাঁচ মাস বৃষ্টির দেখা নেই। অথচ স্কুল থৈ থৈ করছে গোড়ালি সমান জলে। ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা শৌচাগারে যেতে পারছেন না। নোংরা জমা জলে মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। আর এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চলছে ক্লাস। এমনই ছবি দেখা গেছে হাওড়ার বাঁকড়া ইসলামিয়া  অ্যাটাচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

বাধ্য হয়ে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন হাওড়ার বাঁকড়া ইসলামিয়া অ্যাটাচ প্রাইমারি স্কুল চত্বরে নোংরা জল জমে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্কুলের দুটি প্রাইমারি সেকশন রয়েছে। সকালের বিভাগে তিনশ এবং দুপুরের বিভাগে সাড়ে চারশ ছাত্রছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করে। এলাকার পুরানো স্কুল হওয়ায় অভিভাবকদের প্রথম পছন্দের এই স্কুল। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে স্কুলের নিচের তলায় ক্লাসরুম এবং তার বাইরের বারান্দায় গোড়ালি সমান জল থৈ থৈ করছে। নোংরা জল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্কুলটি মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। ছোট ছোট পড়ুয়ারা ওই নোংরা জল মাড়িয়েই ক্লাসে যাচ্ছে। আবার তারা ওই নোংরা জলের পাশে বসে মিড ডে মিলও খাচ্ছে।  অভিভাবকদের অভিযোগ এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাস করার ফলে ছেলেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পায়ে ঘা হচ্ছে। ফলে নিয়মিত স্কুলে আসতে পারছে না। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শৌচাগারে জল জমে থাকায় পড়ুয়ারা এবং শিক্ষক শিক্ষিকারা শৌচাগারেও যেতে পারছে না। ছোট ছোট বাচ্চাদের শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হলে শিক্ষক শিক্ষিকারা বাড়িতে অভিভাবকদের ফোন করতে বাধ্য হচ্ছেন। স্কুলের প্রাত: বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সরেন জানিয়েছেন তারা এই সমস্যার কথা প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। প্রাথমিক স্কুলের পক্ষ থেকে হাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করায় আপাতত বিদ্যালয়ের একতলার কয়েকটি ঘরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

তবে আগস্ট মাসের মধ্যে ক্লাস রুমগুলো ছেড়ে দিতে বলেছে তারা। তখন কি হবে জানা নেই। তিনি আরও বলেন জলে পড়ে গিয়ে এক শিক্ষিকা গুরুতর জখম হন। যে কোনও মুহূর্তে বাচ্চারাও পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাথমিক স্কুলের দিবা বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা অপর্ণা সরদার বলেন স্কুলের এই অসুস্থ পরিবেশ দেখে অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন না। এতে বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। তারা চান যেভাবেই হোক দ্রুত স্কুলের জমা জল সরিয়ে দেওয়া হোক। হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলর চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, তিনি এ ব্যাপারে ডোমজুড়ের বিডিও র সঙ্গে কথা বলেছেন। সরকারি আধিকারিকরা স্কুলে পরিদর্শনও করেছেন। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ওই স্কুলের জমা জল যাতে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *